বিরামপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বিরামপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ করেছন উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মিঞা মোঃ শফিকুল আলম মামুন। বুধবার সকাল ১১টার দিকে বিএনপি’র দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদিক সম্মেলন করা হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করে সাাংবাদিকদের জানান, ৬ সেপ্টেম্বর দৈনিক প্রথম আলোর অন লাইন প্রকাশনায় " খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির লাভের টাকা বিএনপির সভাপতির পকেটে" হেড লাইন করে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। উক্ত সংবাদটি আমদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রথম আলোর বিরামপুর, দিনাজপুর প্রতিনিধি নুর আলম লিখেছেন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় চারটি ইউপি সচিবদের (ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা) ডিলার সাজিয়ে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির লাভের টাকা বিএনপির উপজেলা সভাপতি মিঞা মোঃ শফিকুল আলম নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে তিনি এই কথাও লিখেছেন যে, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নিউজ সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় উপজেলা কাটলা ইউনিয়নে ১ হাজার ৯৬ জন, খানপুর ইউনিয়নে ১ হাজার ১৪৪ জন, দিওড় ইউনিয়নে ১ হাজার ৪১৪ জন এবং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নে ৫৬৪ জন সুবিধাভোগী রয়েছেন। গত সপ্তাহে এসব সুবিধা ভোগীর কাছে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল বিক্রি করা হয়েছে। এই চার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিবদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল উত্তোলন ও বিক্রির জন্য খাদ্য দপ্তরের নিয়োকরা ১৭ জন ডিলার রয়েছেন। এসব ডিলার ইউনিয়ন ভিত্তিক মোট সুবিধাভোগীর বিপরীতে কেজি প্রতি ২ টাকা লাভ করতেন। নিউজ সূত্রে আরাও জানা যায় যে সব ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যান রয়েছেন, সেখানে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রি করতে ইউপি চেয়রম্যান ও ডিলাদের বাধা দিয়েছেন বিএনপি নেতা কর্মীরা।
নিউজ সূত্রে আরও জানা গেছে উপজেলা বিএনপি সভাপতি শফিকুল আলম উপজেলা চারটি ইউনিয়নে ৪ হাজার ২৩৪ জন সুবিধাভোগীর জন্য খাদ্যগুদাম থেকে ১২৭.১৪ মেট্রিক টন চাল কিনতে ইউপি সবিচবদের নামে কেজিপ্রতি ১৩ টাকা হারে মোট ১৬ লক্ষ ৫২ হাজার ৮২০ টাকা বিভিন্ন ব্যাংকে জমা দিয়েছেন। পরে ইউপি সচিবএবং বিএনপি সমর্থিত ইউপি সদস্য ও স্থানীয় বিএনপি নেতা কর্মীদের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের কাছে এই চাল ১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হয়েছে। পরে চাল বিক্রি করে লাভের ২ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা বিএনপি নেতা
শফিকুল আলম ইউপি সচিবের কাছ থেকে নিয়েছেন। উপরোক্ত সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর প্রাপ্ত সরকারী তথ্য অনুযায়ী জানা যায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির নীতিমালা ২০১৭ অনুযায়ী ২(ক) ধারা মোতাবেক ইউনিয়ন খাদ্য বান্ধব কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটিতে (১) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন, সভাপতি (২) ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্যই, সদস্য (৩) ইউএনও কর্তৃক মনোনীত দুইজন গন্যমান্য ব্যক্তি, সদস্য (৪) সচিব ইউনিয়ন পরিষদ, সদস্য সচিব। ৮.১ ধারা অনুযায়ী নীতমিালার ও অঙ্গীকার নামার কোনশর্ত ডিলার লংঘন করলে বা দেশের প্রচলিত কোন আইন অমান্য করলে ডিলারশিপ বাতিল হবে। ৮.৩ ধারা অনুযায়ী ডিলার নির্ধারিত ৭ তারিখের মধ্যে খাদ্যশস্য উত্তোলন করতে ব্যার্থ হলে উপকার ভোগীদের স্বার্থে ইউনিয়ন কমিটির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সাময়িক ভাবে খাদ্যশস্য উত্তোলন/বিতরন করা যাবে। ইহার আলোকে উক্ত কর্মসূচির আওতায় সেপ্টেম্বর ২০২৪, মাসে ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যে কার্ডের মাধমে খাদ্যশস্য বিতরনের লক্ষ্যে ০৭টি ইউনিয়ন ০৭ জন সভাপতি/সদস্য-সচিব ইউনিয়ন খাদ্যবান্ধব কমিটি কর্তৃক পরিচালিত বিক্রয় কার্যক্রম করার জন্য ১ নং মুকুন্দপুর ইউনিয়ন খাদ্য বান্ধব কমিটির সভাপতি হিসেবে মোঃ আবুল কালাম আজাদ, ২নং কাটলা ইউনিয়ন খাদ্য বান্ধব কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে মোঃ ইলিয়াছ আলী, ৩নং খানপুর ইউনিয়ন ইউনিয়ন খাদ্য বান্ধব কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে মোঃ মোস্তাফা জামাল, ৪নং দিওড়খাদ্য বান্ধব কমিটির সদস্য হিসেবে মোঃ মাসুদুর রহমান, ৫নং বিনাইল ইউনিয়ন খাদ্য বান্ধব কমিটির সভাপতি হিসেবে মোঃ হুমায়ণ কবির বাদশা, ৬নং জোতবানী ইউনিয়ন খাদ্য বান্ধব কমিটির সভাপতি হিসেবে মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল, ৭নং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়ন খাদ্য বান্ধব কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে মোঃ মনিরুজ্জামান গত ১৮/০৯/২০২৪ ইং তারিখে সরকারী বিধি মোতাবেক দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।১৯/০৯/২০২৪ ইং তারিখে বিরামপুর উপজেলার ০৭ টি ইউনিয়ন খাদ্য বান্ধব কমিটির সভাপতি/সদস্য সচিবকর্তৃক সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং মাসের জন্য নির্ধারিত ডিওর জন্য নির্দিষ্ট পরিমান টাকা অগ্রনী ব্যাংক পিএলসি বিরামপুর শাখায় ০৭ টি ইউনিয়ন খাদ্য বান্ধব কমিটির সভাপতি/সদস্য সচিব নিজ নিজ নামে চালান যোগে টাকা জমা করেন। পরবর্তীতে ০৭ টি সভাপতি/সদস্য সচিব বিধি মোতাবেক চাল উত্তোলন করে সরকারের দায়িত্বাপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসারগন সহ সুধীজনদের নিয়ে সুবিধাভোগীদের মাঝে উক্ত চাল বিতরণ করেন। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির নীতিমালা অনুযায়ী ০৭ জন সভাপতি/সদস্য সচিব দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার পরও উক্ত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। ইউনিয়ন সচিব গণদের না-কি ডিলার সাজানো হয়েছে? খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ০৭ জন সভাপতি/সদস্য সচিব অগ্রনী ব্যাংক পিএলসি বিরামপুর শাখায় নিজ নিজ নামে ডিও করলেও প্রথম আলোর বিরামপুর প্রতিনিধি নুর আলম লিখেছেন আমি না-কি বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে উক্ত ডিওর টাকা জমা দিয়েছি? মূলত এটিই একটি হলুদ সাংবাদিকতার বহিঃপ্রকাশ।রাজনৈতিক ভাবে আমাকে, আমার সাধারণ সম্পাদককে ও আমার দলকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে প্রথম আলো প্রত্রিকা আমাদের নামে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছে। মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে আমাদের ও আমাদের দলের ভাব মূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য মনগড়া সংবাদের ভিত্তিতে প্রথম আলো প্রত্রিকার বিরামপুর প্রতিনিধি নুর আলম এর প্রেরিত সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এই ভিত্তিহীন ও বানোয়াট সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সাথে প্রথম আলোর মত জনবহুল প্রচারিত দৈনিক প্রতিকায় হলুদ সাংবাদিকদের প্রেরিত সংবাদ প্রকাশের আগে যাচাই বাছাই করার জন্য অনুরোধ করছি। প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগন উক্ত সংবাদে দিওড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের এর যে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে তাও মিথ্যা ও বানোয়াট। দিওড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক গত ইং ০৮/১০/২০২৪ তারিখে উক্ত সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন।
এ সময় বিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার প্রতিনিধি সহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও বিএনপি’র অঙ্গ-সংগঠনের নেতা কমর্াীরা উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন।