আজহার ইমাম ও আবু বক্কর সিদ্দিক: দিনাজপুরের বিরামপুরে গ্রামের মাঠে নিলামে ফুটবলার কেনাবেচার বড় ধরণের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার সীমান্তবর্তী কাটলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের এ নিলামের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় কাটলা ক্রীড়া একাডেমি অ্যান্ড ব্লাড ডোনেশন গ্রুপ এই নিলামের আয়োজন করে।
পড়ন্ত বিকেলে কাটলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শত শত দর্শকের উৎসুক চোখ। তাঁদের সামনে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেরা ফুটবলাররা। চেয়ারে বসে ছিলেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। মাইকে ঘোষণা করা হয় নিলামে ওঠা ফুটবলারদের নাম। দলের মালিকপক্ষ থেকে খেলোয়াড়ের দাম হাঁকা হচ্ছে। উৎসুক জনতার কৌতূহল ও করতালিতে মুখরিত হয়েছিল পুরো মাঠ।
বিরামপুর উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে নিয়মিত ফুটবল খেলেন, এমন ৬০ জন খেলোয়াড়কে বাছাই করতে এই নিলামের আয়োজন করা হয়। সীমান্ত এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে কাটলা ফুটবল প্রিমিয়ার লিগ ২০২৪ (কেপিএল) শুরু হবে। ওই টুর্নামেন্টে বাছাই করা ফুটবলাররা অংশ নেবেন।
জানা গেছে, সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত এবং জেলা ও জেলার বাইরে বিভিন্ন ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে চারটি দল গঠন করা হবে। সেরা ফুটবলারদের বাছাই করতে এই নিলামের আয়োজন করা হয়। প্রত্যেক খেলোয়াড়ের নিলাম মূল্য সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। খেলোয়াড়দের ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ভাগ করে নিলামে তোলা হয়। নিলামের জন্য বিদ্যালয় মাঠের পূর্ব পাশে ৫টি টেবিল দিয়ে সাজানো হয় অস্থায়ী মঞ্চ। মাঝখানে অতিথির জন্য সংরক্ষিত টেবিল। আর অতিথি টেবিলের সামনের দুই পাশে চারটি টেবিলে নিলামে অংশ নেওয়া চারটি দলের মালিকপক্ষ বসেছিলেন। নিলামে অংশ নেয় কাটলা ধানহাটি লিমিটেড, কাটলা ফরিদুল একাদশ, কাটলা মেধাবিকাশ স্কুল ও মুক্তিযোদ্ধা খাদ্যভা-ার নামে চারটি দল। প্রতিটি দলে থাকবে ১৫ জন করে খেলোয়াড়।
নিলাম অনুষ্ঠানের অতিথি ও কাটলা দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল বলেন, ‘খেলোয়াড়দের নিলামে কিনে নেওয়ার দৃশ্য আমরা এত দিন টিভির পর্দায় দেখেছি। কিন্তু বিরামপুর সীমান্তে এমন আয়োজন দেখে খুব ভালো লাগল। সীমান্ত এলাকার যুবকদের মাদক থেকে দূরে রাখতে এমন আয়োজন যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।’
কাটলা ক্রীড়া একাডেমি অ্যান্ড ব্লাড ডোনেশন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক, সামসুল মিয়া বলেন, যুবসমাজকে মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে রক্ষা করতে ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়েছে। এটি মূলত ফুটসাল টুর্নামেন্ট। মাঠ হবে ছোট; প্রতিটি দলে সাতজন খেলোয়াড় থাকবেন। একটি ম্যাচে একজন খেলোয়াড়কে একাধিকবার মাঠে নামানো ও ওঠানোর সুযোগ থাকবে। ৪টি দল মোট ১৯টি ম্যাচ খেলবে। স্থানীয় ক্রীড়ামোদীরা খেলা দেখে আনন্দ পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
স্থানীয় খেলোয়াড় মাসুদ রানা বলেন, ‘১৫ বছর ধরে বিভিন্ন জেলায় খেলছি। এই প্রথম নিলামের মাধ্যমে ফুটবল খেলায় অংশ নিতে যাচ্ছি। আজ (গতকাল) কাটলা ফরিদুল একাদশের হয়ে পাঁচ হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। সামনে সেরা খেলা উপহার দেওয়ার চেষ্টা করব।’