ঢাকা অফিসঃ [২] পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকাস্থ বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফ করার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খানও ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন।
[৩] তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। তারা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে এ বিচারকার্য পরিচালনা করে মৃত্যুর জন্য দায়ী সকলকে আইনের আওতায় আনতে কাজ করবে। এ জন্য জাতিসংঘের টেকনিক্যাল কোনো সহযোগিতা থাকলে বিবেচনা করা হবে। জাতিসংঘ তদন্ত কমিশন নিয়ে যা বলেছে তা একটা ঢালাও প্রস্তাব। বাংলাদেশের তদন্ত কমিশনের বিষয়ে সমান্তারাল কিছু বাংলাদেশ এখনই করতে চায় না।
[৪] এক প্রশ্নে জবাবে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বিদেশিদের সরকারের প্রতি কোনো আস্থার সংকট নেই। তবে তারা তুলে ধরেছে যে, তাদের অনেক বিনিয়োগ আছে। অনেক গার্মেন্ট ফ্যাক্টরির বায়িং হাউজ আছে, সেখানে তাদের কিছু লোকজন আছে। আবার কিছু বিদেশি ছাত্র বাংলাদেশে যারা পড়ে, তারা ইন্টারনেট না থাকাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলো। এ নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার জবাবও দিয়েছে। এখন তারা বাংলাদেশ গ্রেপ্তারের সংখ্যা এবং শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে কি না, জানতে চায়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠন করার ও সমাবেশ করার স্বাধীনতা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। তবে মানবাধিকার সম্পর্কে সরাসরি কিছু জানতে চাননি কূটনীতকরা।
[৫] তাদের জানানো হয়েছে, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে করার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হয়নি, তবে যেখানে নিষেধাজ্ঞা ছিলো সেখানে কিছু বাধা দেওয়া হয়েছে এবং গ্রেপ্তার হয়েছে। এখন পুলিশ খুবই সহনশীল ও ধৈর্য সহকারে তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
[৬] প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের বিষয়ে কোনো প্রশ্নই আসেনি। কূটনীতিকরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা দেখিয়েছেন। উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, ঢাকাস্থ মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বলেছেন, বাংলাদেশ পড়ুয়া দেশটির ছাত্র ফিরে গেছেন তাদের অভিভাবকদের উৎকণ্ঠার কারণে। তারা তাদের দেশের সরকারের কাছে চাপ দিয়েছে, আমাদের সন্তানদের ফিরিয়ে আনো; যেন আমরা শান্তিতে থাকি। হাইকমিশনার জানান, একজনও ছাত্র বাংলাদেশ ছাড়ার কথা বলেনি।
[৭] এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব জানান, গুলি করা নিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বিটিভিতে যখন হাজার হাজার ঢুকে, বেশির ভাগই ছাত্র নয়, অছাত্ররাই তাণ্ডবলীলা চালায়। তখন বিজিবির একটি দল আক্রান্ত হলে আরো একটা দল সেখানে যায়। তখন খুব কাছাকছি তারা চলে আসে সশস্ত্র বাহিনীর কাছে, যা ঠিক নয়। তারা অশ্রাব্য গালি দেয়, যানবাহনে আক্রমণ করে। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে ফাঁকা গুলি করে। ফাঁকা গুলি করার পরও তারা চারিদিক থেকে এগিয়ে আসছিলো। এ পর্যায়ে পরিস্থিতি চলে যাওয়ার পর বাহিনীল লিডার কাউকে গুলি করতে দেননি। তবে তিনি কয়েকজনকে পায়ে গুলি করেন। সেসময় যদি এ পরিস্থিতি সামাল না দেওয়া হত তাহলে পুরো বিটিভি ধ্বংস হয়ে যেত। গুলি ছোঁড়ার ঘটনা খুবই কম। কিছু গুজবের ঘটনা ঘটেছে। যখন তদন্ত হবে সব সঠিক চিত্র বের হয়ে আসবে।