শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - (English Version)

বিরামপুর বাজারে কাঁচা মরিচ চোখ রাঙাচ্ছে

বিরামপুর বাজারে কাঁচা মরিচ চোখ রাঙাচ্ছে

আবু বকর, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি: গত সপ্তাহের কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে ১সপ্তাহের ব্যবধানে দিনাজপুরের বিরামপুরের বিভিন্ন হাট বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ৪০ টাকা বেড়েছে। ১ সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি এলসি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল ১৬০ টাকায়। তা বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। তবে দেশি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৩০টাতা কেজি।
বিরামপুর পৌর বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহের কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে মরিচ ক্ষেত নষ্ট হওয়ার কারণে আমদানি কম হওয়ায় মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সোমবার সকালে বিরামপুর পৗর বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি হলেও বাজারে মরিচের দামের ওপর এর প্রভাব পড়ছে না। চাহিদার তুলনায় কাঁচা মরিচ আমদানি কম হওয়ায় এবং দেশে উৎপাদন কমে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্য দিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় মশলা ও সবজি জাতীয় পণ্যরও দাম বাড়ছে বলছেন স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ীরা।
এদিকে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতারা। সোমবার সকালে বিরামপুর নতুন বাজারে উপজেলার পাশ্ববর্তী উপজেলা নবাবগঞ্জ থেকে বাজার করতে আসা জাহিনুর ইসলাম বলেন, দেশের বাজারে এখন প্রতিটি পণ্যের দাম উর্ধ্বমুখী। কদিন আগেই ১৬০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ কিনেছিলাম। তা কিনতে হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। এভাবে দাম বাড়লে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের চলা কঠিন হয়ে যাবে।
বিরামপুর বাজারের ব্যবসায়ী রাশেদুল ও কুদ্দুস আলী বলেন, কয়েক দিনের বৃষ্টির পানিতে কাঁচা মরিচের খেতে কাঁচা মরিচ নষ্ট হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে কাঁচা মরিচ আমদানি হচ্ছে না। সেই কারণে বাহির থেকে বেশি দামে কাঁচা মরিচ কিনে আনতে হচ্ছে।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষখ আব্দুর রউফ জানান, বৃষ্টির পর অতিরিক্ত গরমের কারণে মরিচ গাছের পাতা কুকড়ে যাচ্ছে। গাছ মরে যাছে। ফলে মরিচের উৎপাদন কম হচ্ছে। ১০কাঠা জমিতে মরিচ লাগিয়েছিলাম. ১৫দিন পর মাত্র ২০ কেজি মরিচ তুলতে পেরেছি। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
মাদিলাহাট সৈয়দপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, ৫০শতক জমিতে এবার মরিচ আবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ১লক্ষ টাকা। ৪হাজার মরিচের গাছ ছিল, তাঁরমধ্যে ৩হাজার মরিচের গাছই মারা গেছে। এখন ১হাজার গাছের মরিচ তুলেছি ৪০ কেজি। পাইকারি ২১০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। মরিচের গাছ নষ্টের কারণে ফলন কম হওয়ায় লোকশান গুনতে হচ্ছে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, নুরুজ্জামান জানান, এ বছর দিনাজপুরে মরিচ আবাদ হয়েছে ৯৬২ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছে ১হাজার ৭শ ৩২ মে.টন। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৯৯০ হেক্টর জমি। উৎপাদন হয়েছিল ১হাজার ৭শ ৮২মে.টন.
দিনাজপুর কৃষি বিপনন সিনিয়র কর্মকর্তা রবিউল হাসান জানান, লাগাতার বৃষ্টির কারণে মরিচ চাষীদের খেত নষ্ট হওয়ার কারণে ফলন কম হচ্ছে। ফলে মরিচের দাম দিন দিন বাড়ছে।
বিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ রায় বলেন, মরিচের খেতে আটপা ওয়ালা মাকট জাতীয় পোকা আক্রান্ত হচ্ছে । ফলে মরিচের গাছের পাতা কুকড়ে যাচ্ছে। ফলে মরিচের ফলন ভাল হচ্ছেনা এবং দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ উপজেলা এবার মরিচের আবাদ হয়েছে ৪৩ হেক্টর, গত বছর হয়েছিল ৪০ হেক্টর জমিতে।

Share This